হোলি, বসন্তের উৎসব, বসন্ত ঋতুর আগমণে, ফাল্গুন (মার্চ–এপ্রিল) মাসের পূর্ণিমার ৩/৪ দিন আগে থেকে পালিত হয়।
ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধরণের পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত আছে হোলি নিয়ে। সব চেয়ে প্রসিদ্ধ গল্প রাক্ষস রাজা হিরণ্যকশিপুকে কেন্দ্র করে। হিরণ্যকশিপু একজন হিংস্র ও অত্যাচারী রাজা ছিলেন। ওর পুত্র প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিলেন। এতে ওঁর পিতা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন এবং নানাবিধ কঠিন পদক্ষেপ নেন যাতে প্রহ্লাদ ভগবান বিষ্ণুকে পূজা করা বন্ধ করে দেন। যখন সকল প্রচেষ্টা বিফল হয়, হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি অনেক রকম পন্থা অবলম্বন করেন, যেমন খাদে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া, হাতি দ্বারা পদপৃষ্ট করা, কিন্তু সর্বসময় ভগবান বিষ্ণু তাঁকে রক্ষা করেন। অবশেষে হিরণ্যকশিপু তার ভগিনী হোলিকাকে ডেকে পাঠান। হোলিকা কোনদিন আগুণে পুড়বে না, কোনদিন এই বর প্রাপ্তা ছিল। হোলিকা আগুণের মধ্যে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে বসলো। কিন্তু, এই সময়েও ভগবান বিষ্ণুর কৃপায়, প্রহ্লাদ অক্ষত থাকেন আর হোলিকা পুড়ে মারা যায়।
অবশেষে, প্রহ্লাদের কঠিন পরীক্ষার সমাপ্তি ঘটে, যখন ভগবান বিষ্ণু নরসিংহ (অর্ধেক মানুষ, অর্ধেক সিংহ) অবতার হয়ে আসেন এবং হিরণ্যকশিপুকে বধ করেন। এই ঘটনা দুষ্টের (যার প্রতিনিধি হিরণ্যকশিপু) ওপর সত্যিকারের ভক্তের বিজয় প্রদর্শন করে।
আজও, হোলির আগের দিন রাত্রে আগুণ জ্বালিয়ে প্রহ্লাদকে রক্ষা করা আর দুষ্ট হোলিকার মৃত্যুকে স্মারণ করা হয়। পরের দিন, আবির একে অপরের গায়ে লাগিয়ে মানুষ উৎসব পালন করে। আবির ভালবাসা, বন্ধুত্ব ও শুভবুদ্ধির প্রতীক।
হোলি মন্দের ওপর ভালোর বিজয় উৎসব।